সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৩

ভয় দেখিও না


ভাবছ বুঝি ভয় পেয়েছি, মিথ্যে ভয় দেখাবে না
শুধু শুধু ভয় দেখালে বলছি কিন্তু খেলব না।
জিভ বার করে, মাথা ঝাকিয়ে ভাবছ তুমি ভয় দেখালে
কিন্তু আমার মনে হল তোমাকে একটা পাগল বলে
ওপাড়ার পাগলা দাশু, মাঝে মধ্যে এরকম করে
সবাই তখন দাশুকে কম্বল দিয়ে চেপে ধরে।
কিছুবাদে দাশু যখন, একটু খানি শান্ত হয়
অবশ্যি তার আগে মাথায় ক বালতী জল ঢালতে হয়।
ভিজে গায়ে হি হি কেপে দাশুর পাগলামী যায় থেমে
কিতু তার আগেই সবার জামা ভিজে গেছে ঘামে।
এবার কিন্তু সত্যি আমি ভয় পাচ্ছি তোমার তরে
কি  বলব আমি তখন, লোকে যদি তোমায় চেপে ধরে।
সত্যি তুমি পাগল না এটা তোমার খেলার খেলা
চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক ঐখানে এইবেলা।।


রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

রামায়ণ আধুনিক ভাবধারায়

রামায়ণ নিয়ে একটু চিন্তা করছিলাম যে আজকের মডার্ণ যুগে যদি রামায়ন লেখা হত  তবে কি রাবনের দশটা মাথা থাকত। সে ভাবে এই লেখাটা সুরু করেছিলাম আর স্মাশয়ার্ডের হাতে দিয়ে ই-বুক বানিয়ে দিয়েছিলাম। পরে আসতে আসতে পরের কান্ড গুলো লেখা শুরু করার সময় আগে যে সমস্ত ভুল করেছিলাম সে গুলোকে ঠিক করে ক্রমাগত এগুলো পোষ্ট কর যাব। পরে একসাথে পথি ডট কম থেকে পিডিএফ ফর্মে বার করার ইচ্ছে আছে।
বাল কান্ডের মধ্যে বিশেষ কিছু বদল করার পাইনি তাই একেবারে অয্যোধ্যা কান্ডের থেকে শুরু করছি।


রামের বনবাস ছবি তোলা হবে। পরিচালক হরি মুশা মহাশয়, চোপড়াজীর পুরোন রামায়ণ সিরিয়াল কম করে ছ'-সাত বার দেখেছেন। আর একটা মুল চিন্তা মাথায় এনেছেন। কিন্তু সেই সিরিয়াল তৈরি হবার পর, অনেকদিন হয়ে গেছে। সমাজের চিন্তা অনেক বদলে গেছে

কাজেই এটা তার মাথায় আছে যে ঐ ধরনের সিন দিলে ছবি ফ্লপ হবে আর তার মানে খুব খারাপ। বাজার যাবে, কেউই আর তাঁকে ছবি করতে ডাকবে না। তিনি অনেক ভেবে ঠিক করলেন সমস্ত পাত্র পাত্রীকে যদি আজকের দিনের করে দর্শকদের কাছে আনা যায় তবে হয়তো তাদের সেটা পছন্দ হবে। লেখক পাওয়া দুর্ঘট হল কেননা কেউই এই সাহস দেখাতে রাজী হচ্ছেন না। অগত্যা তিনি নিজেই সিন লিখতে শুরু করে দিলেন।

প্রথম দৃশ্যে দশরথ নার্সিং হোমের বেডে শুয়ে আছেন। বেডের পাশে অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যালাইনের বোতল, ডায়ালিসিসের মেশিন দেখা যাচ্ছে। মাথার কাছে কার্ডিও মনিটর। মুখে মাস্ক পরে কৌশল্যা আর কৈকেয়ী দেখা করতে এসেছেভিসিটিং আওয়ার শেষ, নার্সের তাড়া খেয়ে ওনারা বাইরের দিকে রওয়ানা দিচ্ছেম। হঠাত কৈকেয়ী পেছন দিকে ফিরলেন। কৈকেয়ীর সাজ একটু উগ্র ধরণের। পরণে মিনি স্কার্ট আর উপর টপ, নার্সিংহোম হলেও তিনি মেকআপের ত্রুটী রাখেন নি।

"তোমরা এগিয়ে যাও। আমি একটু আবার গায়ে হাত বুলিয়েই আসছি।"

কৌশল্যা র গলা, -

"আমরণ, আদিখ্যেতা দেখ না, বাড়ি নিয়ে যাই, তখন গায়ে হাত বুলিয়ে নিস মন ভরে।"

ততক্ষনে কৈকেয়ী দশরথের কাছে পৌঁছে গেছে। একটা হাত দিয়ে দশরথের হাত ধরে মুখটা কানের কাছে নিয়ে কি জানি বলতে লাগলো। দশরথ কথা গুলো শুনছেন আর তার মুখটা ক্রমশ কি রকম হয়ে যেতে শুরু করল। শেষে কৈকেয়ীর পিঠে হাত রেখে বলে উঠলেন

'সেটা কি করে হবে?'

কৈকেয়ী বলে উঠলেন

" না বলবে নাআগে তো আমাকে তুমি কথা দিয়েছিলে। এখন না বলছ কেন?"

দশরথ বলে উঠলেন"

এখন তো যাও। আমি দেখছি কি করে করব এটা।"

পরের দিন। দশরথের বেডের পাশে খালি কৌশল্যা।

"বড় বউ, শোন আমার উইলটাকে একটু বদলাতে হবে, উকিল দিয়ে ওটাকে ঠিক করার আগে  তুমি একটু শুনে নাও।"

"এখন আবার উইলের কথা কেন? ঠিকই হয়ে উঠছ। বাড়ী নিয়ে যাই তখন ওসব হবে।"

না, না। আগে শোন তো।

বল, শুনছি।"।

"রামুকে (রাম) প্রমোশন দিয়ে সিংহাসনে বসাচ্ছি না। ওখানে ভুতু (ভরত) বসুক। দক্ষিনের জঙ্গল মহল থেকে ঠিক মত আদায় আসছে না। রামু গিয়ে ওখানে সব ঠিক করুক।"

"সে কি কথা বলছ। কাল রামুকে রাজপুত্র থেকে রাজার প্রমোশন দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছ। এখন লোকে কি বলবে। তাছাড়া রামু লখুর চেয়ে সিনিয়র। সিনিয়রকে বাদ দিয়ে ভুতুকে প্রমোশন দিলে রামুই বা কিভাবে সেটা নেবে।"

না, বড়বউ, না তুমি যা বলছ ঠিক, কিন্তু আমি যে মেজবউকে কথা দিয়েছি। মাঝে ওদের বাড়ী থেকে অনেক হেল্প এসেছে। এখন ওর জন্য ওটুকু করতে বারণ করবে না। "

“ঠিক আছে, তুমি যখন ঠিকই করে ফেলেছ তখন আমার হ্যাঁ না বলার কোন মানে হয় না। কথাটা তুমি নিজেই রামুকে বলে দিও। নীচে দাড়িয়ে আছে, পাঠিয়ে দিচ্ছি"

কৌশল্যার প্রস্থান। কিছুক্ষন বাদে রামুর প্রবেশ।

" প্রণাম বাবা। আপনি আমায় ডেকেছেন?"

"হ্যারে বাবা। তোকে একটা কাজ করতে হবে। তুই এখুনি জঙ্গলমহলে চলে যা। কাল প্রমোশনের প্রোগ্রামটাতে একটু চেঞ্জ করেছি। ভুতুকে প্রমোশন দিচ্ছি। তোর মেজমা বলছিল জঙ্গল মহলের জন্য তুইই উপযুক্ত লোক"।

"ঠিক আছে। তুমি বলছ যখন, হয়ে যাবে। এটা এমন কিছু প্রবলেম না।"

রামুর প্রস্থান। দশরথ পাশ ফিরে শুয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। চোখের কোনাতে জল।

রেগে লখুর প্রবেশ। বেশ উত্তেজিত স্বরে—

" বাবা, এটা কি শুনছি। দাদার বদলে তুমি ভুতুকে প্রমোশন দিচ্ছ। দাদা নাকি জঙ্গল মহলে যাচ্ছে। ওখানে একটা ভাল হোটেল পর্সন্ত নেই। তার কি হবে? এখানে একা পড়ে থাকবে? না, না, কিছুতেই সম্ভব নয়। তোমার বদনাম হয়ে যাবে। দাদা তো তোমার কথা শুনে দুঃখ করছিল। আমি ওকে আটকাচ্ছি।"

"না রে লখু। আমি তোর মেজমাকে কথা দিয়েছি। রামুকে সে খুব ভালবাসে, কিন্তু চায় যে ভুতু প্রমোশন পায়”

"বুঝেছি কে ব্যপারটা ঘটিয়েছে। যাচ্ছি আমি ঠিক করতে"

রেগে লখুর প্রস্থান।

কাট

কৈকেয়ীর ঘরশালোয়ার কামিজ পরণে মান্তু (মন্থরা) ঝুকে ঝুকে টেবিলের ঢাকাটাকে ঝাড়ছে, ভেতর থেকে কৈকেয়ীর গলার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মন্থরার হাতে ওয়াকিং স্টিক প্যাটার্ণের ক্রাচ লাগান আছে তার সাপোর্টের জন্য। প্রচন্ড রেগে লখুর প্রবেশ। ঢোকার সময় মন্থরার সাথে ধাক্কা লাগার থেকে কোন রকমে বেঁচে যায়।

“মেজমা, এটা কি শুনছি। বাবাকে নাকি তুমি দাদার প্রমোশন দিতে বারন করেছ। তোমার কি পাগলামী করার আর কোন সময় ছিল না। কাল সবার সামনে প্রমোশনের প্রোগ্রাম আছে আর আজকে দাদাকে জঙ্গল মহলে পাঠাচ্ছ”।

“কার মাথায় এ বুদ্ধির জন্ম হয়েছে। নিশ্চয় ঐ লেংড়ি মান্তুরএকদিকে তো আগেই বেকে রয়েছে, আমি এবার মেরে ওকে আর একটু বেকিয়ে দেব যাতে হাতপা একসাথে চালিয়ে চার হাত-পায়ে এগোতে হয়। “

ওরে থাম। বড় হয়েছিস, কিন্তু ঘটে একফটা বুদ্ধি হয় নি। দাদা, দাদা করে দাদার ল্যাজ হয়ে থাকলে কি তোর পাখা গজাবে? মান্তু তো ঠিকই বলেছে।।“

“থাকো তুমি তোমার মান্তুকে নিয়ে আর ভাবতে থাকো ভুতুকে প্রমোশন দেয়াচ্ছ। আমি চললাম দাদার সাথে”।

লখুর প্রস্থান।

রামুর ঘর। রামু একটু উত্তেজিত অবস্থাতে ঘরে পায়চারী করছে। মাঝে মাঝে তার মতে দরকারে লাগবে এমন জিনিষ বার কর বুছানার উপরে ফেলছে। সীতা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

“দেখছ কি? জিনিষ গুলো আমার স্ট্রলীতে ভরে দাও। কবে ফিরব তো জানিনা। বাবাটা কি? দিলে সব ক্যাচাইন করে। ভুতুকে প্রমোশন আর আমাকে জঙ্গল মহল”

“আর ফিরেই বা কি হবে? ওখানে গিয়ে একটা ভাল দেখে থাকার জায়গা ঠিক করে তোমায় নিয়ে যেতে হবে।  কোম্পানীতে আর আমার কোন ভবিষ্যত নেই। ভুতু কি করবে ঠিক নেই আর তার পরে আমাকে চার্জ দেবে?”

“ তার মানে? তুমি একা যাবে? আর আমি এখানে কি করব? আমি না থাকলে পরে ওনার তো খুব সুবিধা হয় নতুন একটা কাউকে নিয়ে থাকতে পারেন।“

“আরে না না। ওখানে সব কিছুই নতুন। তোমার হেল্পিং হ্যান্ড হিসাবে যে কাকে পাব তাও জানি না। আগে সব ঠিক করে নিই তার পরা তোমার যাওয়া।  ওখানে একটা ভাল হোটেল পর্যন্ত নেই।“

“না থাক। তুমি যেখানে থাকতে পারবে সেখানে আমিও পারি। আর তোমাকে কি সত্যিই যেতে হবে। না গেলে কি হবে?”

“কি বলছ? বাবা বলেছেন

হ্যাঁ। হ্যাঁ। উনি নিজেই নিজের কথা রাখেন না, তো অন্য কেন রাখবে। উনি না বলেছিলেন যে তোমাকে প্রমোশন দেবেন। আমি তোমার সাথে যাচ্ছি।‘

“শোবে কোথায়?

“কেন তুমি যেখানে।“

“আমি তো যেখানে সেখানে শুতে পারি স্লিপিং ব্যাগ নিয়ে পড়ে গেলেই হল।“

“বাবা আমাকে একটা ডাবল স্লিপিং ব্যাগ দিয়েছিলেন মনে নেই। ওটাতে দুজনে খুব ভাল হবে। আমি আমার জিনিষ নিয়ে নিচ্ছি আর কোন চিন্তা করতে হবে না।‘

লখুর প্রবেশ।---

একি বৌদি তুমিও কি দাদার সাথে যাচ্ছ? বাহারে। এখানে কিচ্ছু করতে হয় না আর ওখানে গিয়ে উনি একা একা সব কিছু সামলাবেন। দাদা বলত সত্যি কি তুমি যাচ্ছ? না গেলে কি হবে?”

“আরে না। বাবাকে আমি হ্যাঁ বলে দিয়েছি। ইতিমধ্যে নতুন প্রোগ্রামের কথা সবাইকে জানান হয়ে গেছে।“

“বেশ তবে আমিও যাচ্ছি তোমাদের সাথে। উর্মিকে খালি বলে আসছি। আমি আর আলাদা গাড়ী নিচ্ছি না। তোমাদের গাড়ীর সামনের সিটে হয়ে যাবে। আর বৌদি আমি কাবাবমে হাড্ডি হচ্ছিনা, বরং দাদার কাজের সময় তোমাকে পাহারা দেবার স্পেশাল ডিউটি দিতে যাচ্ছি।“

লখুর প্রস্থান। রামু আর সীতা জিনিষ্পত্র গছাতে থাকে।

দশরথের বাড়ীর গেট। রামুর গাড়ী হাজির। রামু আর সীতা দুজনে দুটো ষ্ট্রলী টানতে টানতে আসছে। উপরের জানলা দিয়ে কৌশল্যা দেখছে আর কাঁদছে। পেছন থেকে লখু তার স্ট্রলীটাকে টানতে টানতে প্রায় দৌড় মেরে হাজির। উপরের আর একটা জানলাতে উর্মি কাঁদছে।

লখু ডিকিতে তিনটে স্ট্রলী ভরে দিয়ে পেছনের দরজা খুলে সীতাকে ওঠায়। ওপরের জানলার ওক কোনে সুমিত্রাকে কাঁদতে দেখা যায়। পরে রামু ওঠে, শেষে সামনে দরজা খুলে নিজে ড্রাইভারের পাশে বসে। গাড়ী স্টার্ট নেয়।

দুই ভাই হাত নেরে টা টা করে চলে যায়। ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা স্যাড মিউজিক বাজে, নয়ত কৌশল্যা আর উর্মি দুয়েটে বিচ্ছেদের গান ধরে।

স্ক্রীপ্টের এতটুকু শুনে প্রডিউসার এক লাফ। তার পর একটু নেচে নিয়ে মুশা ভাইকে অর্ডার। “পুরো স্ক্রিপ্ট আপনি লিখবেন। ছবি আগামী মাসে মুহরত হবে। আপনি স্টোরি, স্ক্রিপ্ট, ডিরেকশন দেখছেন। মিউজিকেতে যদি কোন ভুল হয় তবে সেটা আপনি বলে দেবেন। মানে ওভারঅল আপনি সবকিছু।

মুশাভাই আগের স্ক্রিপ্টটা তৈরী করার পরে কেমন জানি ম্যাদামরা হয়ে গেছিলেন। কিছুদিন আই পি এল এ কেচ্ছা পড়ার পরে আবার মাথায় প্লটের কথা গজাতে শুরু করল। এবার বনবাসের যাত্রার পরের অংশে এসে গেলেন।

গাড়ী বেশ কিছু দূর আসার পরে , যখন রাত বেশ গভীর হয়েছে হঠাত গাড়ী হেচকী মেরে থেমে গেল। ড্রাইভার নেমে বনেট তুলে এটা ঠোকে, ওটা টানে। এই করে বেশ কিছুক্ষন বাদে বললে-

“বড়ে ভাইয়া, এ গাড়ী তো জবাব দিয়ে দিল। আমার  নজরে তো কোন কিছু গড়বড় দেখতে পাচ্ছি না। ভাল মেকানিক ডেকে দেখানোর দরকার। মাইল ছয়েক আগে একটা গ্রামে মেকানিকের দোকান দেখেছিলাম, আপনারা গাড়ীতে বসে থাকুন, আমি গিয়ে তাঁকে ধরে নিয়ে আসছি।“

রামুর কথা-  

“যাবিযা, নইলে কি আর করা যাবে। কতক্ষন লাগবে?”

“ তা এখন বাজে রাত আটটা, হেটে যাব, মেকানিক কে ওঠাব। তা প্রায় ঘন্টা চার পাচ লেগে যাবে”।

“যা, আর যত তাড়াতাড়ি পারিস ফিরিস। আমরা নাহয় ততক্ষন গাড়িতেই বিশ্রাম নিচ্ছি।“

ড্রাইভারের প্রস্থান। ক্রমে সন্ধ্যা হয়ে অন্ধকার নেমে আসে।

রামু-

“না দেখছি রাতটা গাড়ীতেই কাটাতে হবে”।

সীতা-

“কি মজা। এখানে রাত কাটাব। কিন্তু আমি ড্রেস ছাড়ব কি করে?”

রামু-

“আমি লখুকে বলে দিচ্ছি ওদিক থেকে একটু ঘুরে আসতে। তাছাড়া তোমার টয়লেটে যাবারও  তো দরকার পড়বে। সেটা এক সাথেই সেরে এস।“

এক এক করে তিন জনই তাদের নাইটড্রেস পরে নিল। আর পরে ডিকি থেকে খাবারের ডাব্বা বার করে ডিনার সেরে নিল।

রামু-

“সীতা, তুমি গাড়ির পেছনের সীটে লম্বা হয়ে যাও। সামনের সীটে আমি আর লখু পালা করে রেস্ট করে নেব। যখন আমি শোব লখু জেগে পাহারা দেবে আর লখু শুলে পরে আমি পাহারা দেব।“

সীতা-

“কেন? আমি কি পাহারা দিতে পারি না।“

লখু-

“বাস, ঐটুকুই বাকী আছে। আধ আলোতে গাছের পাতা নড়ছে দেখে তো ভুত আসছে বলে মনে হবে।“

রামু-

“আর বাহাদুরীতে দরকার নেই। যাও শুয়ে পড়।“

সীতা একবার স্লিপিং ব্যাগে ঢোকার পরে একেবার সকালে উঠল। সারা রাত দুই ভাই নিজের গায়ে থাপ্পড় মেরে মশা তাড়িয়ে সকাল হবার পরে একটু ঝিম মেরেছে।

হঠাত দূরে ব্যান্ড পার্টির আওয়াজ শুনতে পেয়ে চমকে তাকিয়ে দেখে দূরে একটা গাড়ী সাথে কিছু লোকজন আসছে। একটু বাদে ঠাহর হল যে আসছে সে ভুতু (ভরত)। ভুতু একটু কাব্য করে কথা বলে। আসলে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে  পালাগান লেখা  অভ্যেস করছে।

ভুতু-

“দাদা মেজদা, কোথা যাও চলিয়া,

কাদিতেছে অযোধ্যাপুরী ফুলিয়া ফুলিয়া,

যেও নাক পায়ে ধরি,

বউদির চেহারা এ কি হেরি।

কোথা গেল সে পাউডার  চর্চিত মুখশোভা,

এক্ষনে দেখাইতেছে যেন পানা ভরা ডোবা।

হাসিওনা তোমরা সবে,

আমি আসিয়াছি এবে, ফিরাইতে তোমাদের।“

রামু- “ তা হয় নারে ভাই। হ্যারে মেকানিক এনেছিস সাথে?”

ভুতু- 

“মেকানিক আনিয়াছি সাথে, কিন্তু কিবা প্রয়োজন তাহার,

আমার গাড়ী লহ কর ব্যবহার।“

লখু- হ্যাঁরে ভুতু। আসার সময় উর্মীকে বলেছিলাম মান্তুকে পেটানর সুপারীর বন্দোবস্ত করতে। তার কি হয়েছে জানিস। কেউ কি এসেছিল পেটাতে?”

সীতা- “ সুপারী বনে কি হবে। পান কে খাবে।”

ড্রাইভার- “বড়ে ভাইয়া, মেকানিক বলছে আর দুঘন্টার মধ্যে গাড়ি ঠিক করে দেবে। তখন রওয়ানা দিলে দিন থাকতে থাকতে বর্ডারে পৌঁছে যাব। বেলা পাচটার পরে আর বর্ডার ক্রশ করতে দেয়না।“

রামু- ‘ অতি উত্তম। ভুতু, তুই আমাদের সাথে বর্ডার পর্যন্ত চল। অযোধ্যার কথা শুনে নেব। ওখান থেকে তুই ফিরে আসিস। এ গাড়িটাও তো ফেরত যাবে।“

ভুতু-

“ মেজদা তুমি মন দিয়া শোন,

মান্তুকে কেহ পিটায় নাই এখনও,

তবে মা আর বড়মার সাথে মার কথা নাই,

দেখাইতেছে যেন হইয়াছে ঠাই,ঠাই।”

রামু আর সীতার চোখের কোনে জল।

ভুতু-

“বৌদি, সত্য আমি কহিতেছি শোন।

মান্তুকে রাগের চোটে কেহ পিটায় নাই এখনও।

কিন্তু অবিরত গালির ধারায় ভরিতেছে কান,

হয়তো গিয়া দেখিব সে ত্যজিয়াছে প্রান।

অযোধ্যাতে রাত্রকালে জ্বলে নাই আলো,

অন্ধকার, নিষ্প্রদীপ, কুচকুচে কালো।

সরযুর কুল ছাপি গিয়াছে জলে,

এত নয়ন ধারা বহাইতেছে সকলে।

মেজদা হইয়াছ অতি শ্বার্থপর তুমি,

দুঃখের সাথে ইহা জানাইতেছি আমি।

মেজবউদি আমার, তোমার উর্মিমালা,

কাঁদিতে কাঁদিতে তার ধরে গেছে গলা।

কহিয়াছে মোরে যতক্ষন না ফেরে তোমার মেজদা,

করিবনা কোন প্রসাধন যতই না লাগুক ময়লা কাদা।

যাবার সময় সে শেষ দেখিয়াছে এই বসনে মোরে,

বসন বদলাইলে সে যদি চিনিতে না পারে।

সে ফিরিবে কবে তাহা যদি জানিতাম,

তবে এই পরিধান সেই দিনই পরিতাম।

আর ভেবেছ কি কোম্পানীর সি ও র চেয়ারে কে বসবে,

নাকি কম্পানীটাকে লাটে তুলে দেবে।

দাদা নাহয় এসেছে বাবার কথা শুনে,

তুমি ত এসেছ কোন কাজ বিনে

সীতাকে—

“বউদি, বলত দশটি রুটী বানাইতে কত জল লাগে,

কি কি মিশাইতে হয় ঢালিবার আগে।

এর আগে কোনদিন করেছ কি রান্না,

লঙ্কার ঝাঝ লেগে পেয়েছে কি কান্না।

এই সব কাজ তোমার দ্বারা নয়,

সেই জন্যই তো পাচ্ছি আমি ভয়।

হাতপা পোড়াবে কোন একদিন,

এখানের হস্পিটালে নেইকো কেবিন।

ফিরে চল কহিতেছি আমি বারংবার,

এর পরে কি করিবে বিচার তোমার।

আসিয়াছিলাম তোমাদের ফিরাইব ঘরে,

আমি ফিরিয়া গেলে পস্তাইও না পরে।

দাদা এক কাজ কর, দাও কিছু চিনহ,

চেয়ার শূন্য থাকিবে তাহা ভিন্ন।

কাজ কর্ম দেখিব আমি চিনহের নাম লইয়া,

লোকে তাহা মানিবে চিনহ দেখিয়া।

রামু-

“নে তবে এটা”। পকেট থেকে তার আই-পড বার করে দেয়।

ভুতু-

“খুব ভাল চিনহ দাদা,

এটার চেয়ে আউর জাদা,

কি দিতে পার এখন,

বনেতে রয়েছ যখন”।

আই-পড লইয়া ভুতুর প্রত্যাবর্তন। রামু, লখু এবং সীতার বর্ডারের দিকে গমন।

  

 

 
 

শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৩

সোনা যে গাছেই ফলছে

গাতকাল সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে র মৃত্যু সংবাদে  মন খুব খারাপ ছিল। কিন্তু সারা দিন আমরা যদি সবাই মন খারাপ করে বসে থাকি তবে কি আবার দিন গুলোকে ফিরে পাব। তাই চেষ্টা করছি যাতে আপনারা একটু হাসেন।

সোনার দাম কমবে এবার বলল এসে গুল্লি
যেন তার কানের কাছে এসে বলেছে কালো বিল্লী
ধ্যাত, যা ভাগ এখন, মারবি না গুল মোটেই
এসব কথা শুনলে পরে মনেতে দুঃখ ফোটে
জন্মের মধ্যে কম্ম করে পেলাম গিন্নীর গয়না
লোনের সময় যাচাই করায়, বলে নকল সোনা।
গিন্নীকে যদি বলি তবে ডাইভোর্স হবে তক্ষুনি
কিন্তু কাজের লোক আর নর্মসহচরী কোথায় পাই এক্ষুনি।
নাগো দাদা, সত্যি বলছি কালাগুর্লির কাছে
সোনা পাওয়া যাচ্ছে ইউক্যালিপ্টাস গাছে
যা যা গুল মারিস না, সোনা কি গাছে ফলে?
যাওনা গিয়ে নিজেই দেখ বৈজ্ঞানিকেরা কি বলে
একশ ফিট মাটির নীচে সোনার গুঁড়ো আছে
জলের সাথে মূল দিয়ে উঠেছে সে গাছে
তারপরে পাতায় পৌঁছে তার জার্নি শেষ
সোনার লোভে বিকচ্ছে হোথায় পাতার অবশেষ
তাহলে কেন যাই না চলে সেই দেশেতে ভাই
কালাগুর্লি নামটাও মনে থাকে না ছাই।
দেনারে তুই একটা ভিসা জোগাড় যন্তর করে
আসব ফিরে নিয়ে সোনা, দু স্যুটকেশ ভরে
স্মাগল করছি না ভাই, বিদেশে কেনা নয়
খালি আনার ব্যপারে ওদেশের আপত্তি না থাকলে হয়
কি বললি, ভিসা দিচ্ছে না, বলছে জাতীয় সম্পত্তি
কি দরকার ছিলরে তোর আমাকে দিতে বাতি।।

কাল সংবাদপত্রে পড়েছি অস্ট্রেলিয়ার কালাগুর্লিতে ইউক্যালিপ্টাস গাছের পাতায় সোনার কনিকা পাওয়া গেছে। তার উপরেি এই ছোট্ট ছড়া।

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

সংখ্যার ঘন নির্ণয় (To find the cube of a number)

বছর আটেক আগে মধ্যপ্রদেশে থাকার সময় ক্লাস নাইনের একটি ছেলেকে অঙ্ক পড়াতে গিয়ে তাদের স্কুলে (হিন্দি মাধ্যম) বৈদিক গণিত পড়ান হছে দেখে আমার উৎসাহ জাগে। ছেলেটির কাছ থেকে বইটি নিয়ে ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করে দেখেছি এর মতন সহজ উপায়ে অঙ্ক আর কোন ভাবে করা যায় না। এই সম্বন্ধে আমি একটা বাংলাতে ই-বুক লিখে Smashwords থেকে পাবলিশ করেছি।
 দুতিন সপ্তাহ ধরে ভাবছিলাম যদি এর কিছু অংশকে আমাদের বীজগণিতীয় সুত্রের মতন বানান যেত তবে হয়ত আরও ভাল হত। এখানে আমার তৈরী ঘন বার করার সুত্র দিচ্ছি। ভুল থাকলে আমাকে জানাবেন যাতে আমার নিজেরও সেটা শুধরে নেবার অবকাশ থাকে।
এ সম্বন্ধে প্রথম যেটা ঠিক করার দরকার সেটা হল আধার, উপাধার এবং বিচলন এর ধারণা। আধার হচ্ছে ১০। ১০০,১০০০, ১০০০০ ইত্যাদি যাকে আমরা ইংরাজীতে exponent বলে জানি। ১০ ের আধার সংখ্যা ১, ১০০০ এর আধার সংখ্যা ৩ ইত্যাদি। উপাধার হচ্ছে সেই সংখ্যা যেটা দিয়ে গুন করে আমরা ১০ থেকে ২০, ৩০, ইত্যাদি বানাতে পারি।
বিচলন হচ্ছে আধার থেকে সংখ্যাটির পার্থক্য। যেমন ৯৫ র বিচলন হচ্ছে ১০০-৯৫ = -৫
৭৮৫ সংখ্যার আধার আমরা নিচ্ছি ১০০। উপাধার ৭ বা ৮ এবং বিচলন হবে উপাধার ৭ নিলে +৮৫ , আর উপাধার ৮ নিলে -১৫।
এবার আমরা ঘন বানানোর সুত্র বার করব।
[(উপাধারের বর্গ) X (সংখ্যা+ ২ X বিচলন)]; [(উপাধার X X বিচলনের বর্গ)];  [(বিচলন)(বিচলন)(বিচলন)]
 
ধরা যাক আমাদের ১০৬ র ঘন বার করতে হবে। আধার ১০০ উপাধার ১ বিচলন ৬ সুত্র হছে যেহেতু আধার ১০০ তাই আমাদের উত্তর হবে ৩ +২=২= ৭ সংখ্যা বিশিষ্ট। আমরা ডান দিক থেকে নিচ্ছি। প্রথমে বিচলনের ঘন অর্থাৎ ৬ X X ৬ = ২১৬ । তার পরে নেব বিচলনের বর্গকে ৩ গুন করা। পাচ্ছি ১০৮। পরে নিচ্ছি সংখ্যার সাথে দুবার বিচলনের যোগ। অর্থাৎ ১০৬+১২=১১৮।
এবার বা দিক থেকে লিখছি। ১১৮০০০০+১০৮০০+২১৬= ১১৯১০১৬।
If I put b as base and s as sub-base and v as the variance then the formula of finding the cube of the number n will be s2(n+2v)for first block , 3sv2 for the middle block and v3  for the third block. Or [s2(n+2v)] [3sv2] [v3}.
The reason of making the rules separated by block is that the digits in that block will depend on the value of b. If the base is 10 the second and third block will hold only one digit of the answer and the balance digits will be carried over to the next left block. If the base is 1000 the capacity of these blocks will be three each.
223. Here the base is 10. Sub base is 2 and variance is 2. Therefore applying the formula we have
22 X (22+4) ] [2 X 3 X22] [ 23] or (4X26) (24) (8) or(104)(24)(8).
Since the base is 10 therefore the second and the last block  from left will hold only one digit and the rest will be carried over to the next left block.
So we have 10400+240=8=10648 as answer.
 
For  953. Putting this in formula, our base =100, sub-base = 1 and variance =-5
So [12X 95-(2X5)] [1 X 3 X (-52)}] (-53) or [95-10] [3 X 25] [-125]
Or [85][75][-125] or 857500-125=857375.
Therefore cube of 95 is 857375.
 

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৩

ম্যানমেড ফ্লাড ??

পুজার মধ্যে উড়িশ্যা আর অন্ধ্রের উপরে যে সাইক্লোন বয়ে গেল সেটা উত্ত পশ্চিম দিকের থেকে মুখ ঘুরিয়ে ক্রমে উত্তর এবং পরে উত্তর পূর্ব দিকে এসেছে। এর প্রভাবে উড়িষ্যার পরে ঝাড়খন্ড, বিহার এবং পশ্চিম বাংলার উত্তর ভাগে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ডিভিসি তদের জলাধারের ক্ষমতার বাইরে বৃষ্টি হলে পরে জল ছাড়ে সেটা একটা নীতি গত ব্যাপার। পশ্চিম বাংলার সরকার বলে যাচ্ছেন তাদের না জানানতে বন্যাতে ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, যেন তার জানলে পরে ক্ষতি হত না। যখন ঝড় এবং বৃষ্টির দাপটে উড়িষ্যা নাজেহাল হলেও সমানে লড়ে গেছে তখন পশ্চিম বাংলা সরকারের এই মনোভাব কি সমর্থন করা যায়? তারা কি বৃষ্টি কতটা হবে সে সম্বন্ধে খবর রাখেন না না পুজার প্যান্ডেলে গান বাজিয়ে আর প্রাইজ দিয়ে দায়িত্ব খালাস করেছেন। আপনারা কি বলেন?

শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

Stamps and First Day covrs.


reference is given to sale of five first day covers issued in 1962. The images are given herewith. Anyone interested can contact me on 09833463796.
 

These two covers costs INR150 plus postage charges extra on actuals.
Balance three Fiurst Day covers images are given below. They cost INR 100 + transshipment charges extra,



HAPPY COLLECTING

 

রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৩

তিহার জেলে নির্বাচনী প্রচার

 তিহার জেলে অফিস বসেছে, তিইন্টে অফিসার

কয়েদিরা সব লাইন দিয়েছে ফঈম ভরবে এবার

বিচার বিভাগ বলেছিল কয়েদীদের দিতে বাদ,

আমাদের নেতারা তাতে গুনল প্রমাদ,

চুরি, জোচ্চুরি এসব ছোট কাজ করে আমরা আছি জেলে

খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাশ চালায় নেতারে বাইরে হেঁসে খেলে।

এতদুর লেখার পরে কদিন লেখা হউএ ওঠেনি। কিন্তু ইতিমধ্যে অর্ডিনান্স বাতিল হয়ে গেছে, তাই নতুন সময়ে নতুন ভাবে এই বুষয়ে লেখা এই কবিতার টুকরো।

নির্বাচন আর কয়েদী

তিহার জেলে ক্যাম্প বসবে, লোকজন তৈয়ার,

এমন সময় রাহুল বাবার এ কী ব্যবহার

জেলার, ওয়ার্ডার, সবাই তৈয়ার, কাগজপত্র নিয়ে

ইলেকশনে দাঁড়াবে বলে ক্কয়েদীরা আছে সার দিয়ে

বাইরে নেতারা মনমোহন আর সুষমা কে ধরে

আইনটাকে তৈরীর কাজ এনেছিল শেষ করে

এমন সময় পাল্টী খেল সরকার পক্ষ

যেন তারা হয়ে গেল প্রধান বিরোধী পক্ষ

আর আসল বিরোধীরা, চেচান যাদের কাজ,

যেমন চেচিয়েছিল গতকাল, তেমন চেচাবে আজ।

রাহুল বাবা, একী ব্যপার অর্ডিনান্স করলে আউট

আগামী নির্বাচনে তোমার হয়ে কে আর করবে সাউট।

চোদ্দর ভোটে হারলেও পরে ছিলনা কোন ভয়

এই অর্ডিনান্সে আমরা পচ্ছিলাম বরাভয়।

রাহুল বাবা, বুঝি এটা,পাঠাতে চাও বিরোধীদের জেলে

কিন্তু সেটা সম্ভব হবে, প্রমাণ হাতে পেলে

যাকগে ভেবে আর কি লাভ হবে এখন

অর্ডিনান্সটা তুমি বাতিল করেছ যখন।

জেল ছাড়ার পরে ছটা বছর একটু কষ্ট হবে

ঐ কটা দিন বুঝে শুনে কাজটা চালাতে হবে।

তার পরেতে দেখে নেব, ভোটে জিতে আসব যখন

দেখো তোমরা চোখটি মেলে আমার ক্ষমতা তখন।।