ভাগ্নী আমার বায়না ধরেছে , ভূত মামু আমাকে একটা ভূতের গল্প শোনাও। এখানে একটা কথা বলে রাখি, আমার কানে লম্বা লম্বা চুল আছে। কেটে দিলে ওগুলো তাড়াতাড়ি বাড়ে বলে আমি আর ওগুলোকে কাটিনা। আর তাই জন্য খুব ছোটবেলায় ও আমার একটা ছবি একেছিল যার কান থেকে লম্বা লম্বা চুল বেড়িয়ে ছিল। আমাকে দেখিয়ে বলেছিল এটা তোমার ছবি এঁকেছি। আমি বলেছিলাম এটা তো ভূতের ছবি হয়েছে। সেই থেকে আমাকে ও ভূত মামু বলে ডাকে। আমি যখন বললাম যে "ভূত কি আমি দেখেছি যে তার গল্প শোনাব"। ও বলে - "তোমার বন্ধুবান্ধব্রা তো সবাই প্রায় ভূত, বিশেষ করে মেয়েগুলো তো পেত্নী। একেবার পেত্নীর মতন সেজে থাকে"। আমি ভাবি - "সত্যি কথাই বলেছিস রে", সাবান,বুরুশ না লাগালে আসল রঙ বোঝা যাবে না। আসলে যদি আসল রঙ বা চেহারাটা দেখে ভয় পেয়ে যাই তাই বুরুশ দিয়ে ঘরের রঙ লাগানোর মত পুরু করে পেইন্টিং করে নেয়। কিন্তু তারা কি আসলে ভূত?
শুদ্ধ বাঙলা ভাষাতে ভূত মানে গত, বা যা অতীত হয়েছে যেমন গতকাল। বোধহয় সেইজন্যই কেউ মারা গেলে আমরা বলি গত হয়েছেন। তার মানে যা দেখা যাচ্ছে না, অদৃশ্য, তা গত। মানে ভূত। আমি যেমন আমার মাথায় বুদ্ধি আছে কিনা দেখতে পাই না, সেটা অদৃশ্য আছে। অতএব আমি যদি বলি আমার মাথায় বুদ্ধি নেই, কেননা আমি সেটা দেখতে পাচ্ছি না, সেটা ঠিক হবে না। প্রমাণিত হল ভূত আছে। থাকবেই কারণ সব জিনিষ মরবে এবং ভূত হবে। এটা আদি অকৃত্রিম সত্য।
এবার আসা যাক ভূতের ক্লাশিফিকেশনে। ভূত কয় প্রকার? আসলে যে সমস্ত জিনিষ, (বস্তু, প্রাণী) জ্যান্ত আছে আর মরবে তত রকমের ভূত পাওয়া যাবে। মানে আমরা মানূষ মরে মানুষ ভূত, গরু মরে গোভূত, শকুন মরে শকুনভূত হব এবং হয়েছে। মেয়েরা মরে পেত্নী হবে। তার প্র্যাকটিস করতে তারা জ্যান্ত থাকতেই পেত্নী সাজা শুরু করে। ইনফ্যাক্ট তাদের রঙ ঢং পেত্নী হয়ে কোন ভূতের মনে রঙ ধরাবে তারই বাছাই পর্ব। কে কার সাথে লিঙ্কড আপ হবে সেটা ঠিক করে নেওয়া। পরে তাদের ছানাপোনাদের মানুষ, থুড়ি ভূতপেত্নী তৈরী করতে হবে যে।
এবার দেখা যাক ভূতেরা কি করে? কি খায়? যেহেতু মানুষ মানুষের মাংস খায় না তাই ভূতও ভূতের মাংস খায়না। আর মানুষের মাংস? আজকাল ভেজাল খেয়ে খেয়ে আমাদের শরীরে এত বেশী ভেজাল জমে গেছে, আমরা টক্সিক (মানে ওদের কাছে বিষাক্ত) হয়ে গেছি। খেলেই বদহজম, অম্বল, ডায়রিয়া হবার সম্ভাবনা। তাই ওরা আমাদের খায় না।ভুতে ধরে ধরে হাতপা ছিঁড়ে খাচ্ছে, এটা আর সম্ভব নয়।মাংষাশী ভূত হলে গোভূত, ছাগল ভূত ধরে খাবে। ভেজিটারিয়ান ভূতেরা নিশ্চয়ই মরে যাওয়া গাছপালা (ভূত হয়ে যাওয়া) খায়। ে এই সম্বন্ধে এখনো পর্যন্ত কোন সাক্ষ্য প্রমান আমি পাইনি। কেউ পেলে জানাবেন নিশ্চয়।তার মানে আমরা পাচ্ছি যে ভূতের চেহারা আমাদের মতনই। তালগাছের মত লম্বা ঠ্যাং নিয়ে চলা বা আগুনে গোলার মতন চোখে দেখা এসব কল্পনা। কেননা মরে যাবার পরেই কারুর এই রকম আচমকা বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব নয়।
আইনস্টাইনের মতে কোন বস্তুর গতি আলোর গতির চেয়ে বেশি হতে পারেনা। যদি হয় তবে সেটা সময়ের বিপরীতে যাবে। মানে আমরা টাইম মেশিনের সাহায্য নিয়ে আজকে ২০১১সালে চলে যেতে পারব, কিম্বা তার চেয়েও পেছনে। এখন ২০১২ সালের পয়লা জানুয়ারীতে যে মারা গিয়েছে সে ২০১১ সালের পয়লা ডিসেম্বর জ্যান্ত ছিল। আর সে সময় আমরা তাদের দেখতে পেতাম। এই অবস্থাতে দেখছি ভূতেদের কাছে যদি টাইম মেশিন থাকে তবে তাদের চেনা সম্ভব নয়। এই সব ভূতেদের সম্বন্ধে সাবধান থাকা দরকার।
এতদূর শোনানর পরে ভাগ্নী আমার বাধা দিয়ে বলল," তুমি যা কিছু বললে সেটা আমার মাথার থেকে কম করে এক ফুট উপর দিয়ে উড়ে গেল। কিছু বোধগম্য হল না। এর চেয়ে আমার ঠাকুরমার ঝুলির দৈত্য দানবদের সহজেই বোঝা যায়। তুমি তোমার এই সব ভুতেদের নিয়ে থাক। তবে তোমার বান্ধবীরা প্রায় সবাইই পেত্নী নিদেন পক্ষে শাকচুন্নী, এটা অকৃত্রিম সত্যি কথা"।
উত্তরমুছুনবাংলায় ভালো ভালো হাঁসির গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলায় ভূতের গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলায় প্রেমের গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন