এক নেকড়ে একদিন তার শিকার থেকে ফেরার সময় সামনে দেখে এক খামার বাড়ি আর সেখানে কিছু ভেড়ারয়ে গেছে। এই নেকড়ে কিন্তু আগে কোনদিন ভেড়া দেখে নি। কাজেই ভেড়ার মোটাসোটা চেহারা দেখে একটু নরম হয়েই তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আজ্ঞে সুপ্রভাত মশাই,আপনি কে হে ভাই। আপনার নামটা কি বলুন না”? ভেড়ার গলার আওয়াজ এমনিতেই একটু বেশি মোটা আর সে তার গম্ভীর গলায় বল্লে, “আমার নাম হচ্ছে ভেড়া। আর তোমার নামটা কি”? কিন্তু এই কথাগুলো জিজ্ঞেস করার সময় ভেড়া তার সামনের পা দুটো বেশ একটু উচু করেই রেখে কথা বলছিল, যাতে মনে হয় এইবার মাথা দিয়ে গুঁতিয়েই দেবে, নেকড়ে এই ভেড়ার গম্ভীর গলার আওয়াজ শুনে বেশ একটু ভয় পেয়ে গেল আর নিজের পরিচয় হিসাবে কোন রকমে “আমি নেকড়ে” এই কথাটুকু বলে পড়ি কি মরি করে পালাল। এখন এই নেকড়ে যে জঙ্গলে থাকত, সেখানে এক শেয়ালও থাকত। হাঁফাতে হাঁফাতে নেকড়ে গিয়ে শেয়ালকে বলে, “ও শেয়াল ভায়া, আজ আমি একটা ভয়ানক ধরনের জানোয়ার কে দেখেছি। কি তার গলার আওয়াজ, আমি তো ভাই, ভয়ের চোটে পালিয়ে এসেছি । নাম জিজ্ঞেস করলাম তো বলে আমি ভেড়া”। শেয়াল বলে, “ভায়া তুমি একটা বুদ্ধু, ভেড়ার মাংস তুমি কি আগে খাওনি। ঠিক আছে, কাল আমরা দুজনে গিয়ে ওটাকে মেরে ভাল ভাবে মাংস খাব”। কিন্তু নেকড়ে যেতে ভয় পাচ্ছে দেখে বলে, “ঠিক আছে একটা দড়ি দিয়ে আমরা একে অন্যের সাথে বাঁধা থাকলে তো আর কেউ কাউকে ছেড়ে পালাবে না”। পরের দিন সকালে যখন ভেড়া তার সকালের জলখাবার খাচ্ছে তখন হটাত দেখে দূরে নেকড়ে আর শেয়াল দুজনে মিলে আসছে। ভেড়া তো ভীষণ ভয় পেল আর তার গিন্নী কে বললে, “গিন্নি আজ মনে হচ্ছে আমাদের শেষ দিন। আমাদের খেতে নেকড়ে আর শেয়াল দুজনে মিলে আসছে”। ভেড়া গিন্নী বলে, “চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি সব কিছু ঠিক করছি। তুমি বরঞ্চ এক কাজ কর। আমাদের ছোট বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে একটু বাইরে থেকে ঘুরে হাওয়া খাইয়ে আন। আর হ্যাঁ, আমি তোমাকে ইশারা করলেই তুমি বাচ্চাটার গায়ে খুব জোরে একটা চিমটি কেটে দেবে। যাতে বাচ্চাটা কেঁদে ওঠে”। এদিকে শেয়াল আর বাঘ যখন কাছে এসেছে অমনি ভেড়া গিন্নী ইশারা করতেই ভেড়া তার বাচ্চাটাকে দিয়েছে এক চিমটি। আর বাচ্চাটা কেঁদে উঠেছে। তখন ভেড়াগিন্নী জোরগলায় বলে উঠল, “ঠিক আছে শেয়াল ভায়া। একেবারে ঠিক সময়েই নেকড়েটাকে ধরে এনেছ। দেখনা বাচ্চাটা খাবে বলে কাঁদছে। নিয়ে এস কাছে। বাচ্চাটাকে খেতে দিই”। নেকড়ে এই কথা শুনে ভাবে সত্যি বুঝি শেয়াল তাঁকে ধরে বেঁধে নিয়ে এসেছে ভেড়ার কাছে খেতে দেবে বলে। আর কি সে থাকে ওখানে। প্রাণপনে পেছন দিকে মারল ছুট। আর শেয়াল তো দড়ি দিয়ে নেকড়ের সাথে বাঁধা আছে। সে মাটিতে আছাড় খেয়ে, ঘষটে গায়ের ছালচামড়া ছিঁড়ে, নেকড়ের বাঁধনের সাথে চলল জঙ্গলের দিকে। একেবারে জঙ্গলের ভেতরে না যাওয়া পর্যন্ত নেকড়ে আর থামে নি। ভেড়া, তার গিন্নী আর বাচ্চা বেঁচে গেল।
from Spicydilip http://ift.tt/1wYA6xU
via IFTTT
উত্তরমুছুনবাংলায় ভালো ভালো হাঁসির গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলায় ভূতের গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
বাংলায় প্রেমের গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন